শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫, ১১:২৭ পূর্বাহ্ন
অনলাইন ডেস্ক: করোনা ভাইরাসে সৃষ্ট রোগ কোভিড-১৯ পুরুষের শুক্রাণুর মানের ওপর প্রভাব ফেলে এবং প্রজননক্ষমতা কমিয়ে দিতে পারে। সম্প্রতি নতুন এক সমীক্ষায় উঠে এসেছে এমন তথ্য। গত বৃহস্পতিবার রিপ্রডাকশন জার্নালে প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় এমনটি জানা গেছে। সিএনএন
সমীক্ষায় বলা হয়েছে, কোভিড-১৯ বীর্যের গুণগত মান হ্রাস এবং পুরুষের প্রজনন সম্ভাবনাকে ব্যাহত করে। তবে গবেষণার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নন, এমন বিশেষজ্ঞরা এই প্রতিবেদনের ফলাফল নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন।যুক্তরাজ্যের দ্যা ইউনিভার্সিটি অব শেফিল্ডের অ্যান্ড্রোলজির অধ্যাপক এলান পেসি বলেন, ‘তারা এ রিপোর্টের মধ্য দিয়ে যে ব্যাখ্যা উপস্থাপন করেছেন, তার প্রতি সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানাব আমি। যেমন, এই সমীক্ষার লেখকরা দাবি করছেন, তাদের প্রাপ্ত ফলাফল অনুসারে কোভিড-১৯ সংক্রমণ পুরুষের প্রজননতন্ত্রে তাৎপর্যপূর্ণ প্রভাব ফেলে। তবে এটি শুধুই একটি সংস্থার ভাষ্য।
ইমপেরিয়াল কলেজ লন্ডনের রিপ্রোডাকটিভ এন্ডোক্রিনোলজি অ্যান্ড এন্ড্রোলজির কনসালট্যান্ট ডা চান্না জায়াসেনা বলেন, ‘যে কোনো ভাইরাসের আক্রমণেই আপনার শুক্রাণু উৎপাদনক্ষমতা কয়েক সপ্তাহ এমনকী কয়েক মাস পর্যন্ত নেমে যেতে পারে। এটি একেবারে সাধারণ ফ্লুর ক্ষেত্রেও স্বাভাবিক একটি উপসর্গ। ফলে তারা যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন, এর কতটুকু কোভিডে আক্রান্তের ফলে কমেছে এবং কতটুকু সাধারণ অসুস্থতার হেতু, সেটি স্পষ্ট নয়। যুক্তরাজ্যের নিউক্যাসল ইউনিভার্সিটির ফার্টিলিটি সেন্টারের প্রধান এলিসন মারডক জানান, ‘আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কথা ভুলবেন না, বীর্যে কোভিড-১৯ ভাইরাসের উপস্থিতির কোনো প্রমাণ কিন্তু পাওয়া যায়নি। এমনকী বীর্যের মাধ্যমে কোভিড-১৯ ভাইরাস ছড়াতে পারে- এমন কোনো তথ্যও এখন পর্যন্ত প্রমাণিত হয়নি।কোভিড-১৯-কে কোনো অঙ্গপ্রত্যঙ্গের জন্য উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ঘোষণার আগে দীর্ঘমেয়াদী গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে বলে জানান মারডক।
এদিকে, ভাইরাসে সংক্রমিত হননি- এমন ১০৫ জন প্রজননক্ষম পুরুষ এবং সংক্রমিত ৮৪ জন পুরুষের ওপর এ সমীক্ষা পরিচালিত হয়। ১০ দিন অন্তর অন্তর পুরো দুই মাস তাদের বীর্যের নমুনা বিশ্লেষণ করা হয়। কোভিড-১৯ ভাইরাসে সংক্রমিত হননি, এমন মানুষের চেয়ে ভাইরাস আক্রান্তদের শুক্রাণুর কোষে উল্লেখযোগ্যহারে প্রদাহ এবং অক্সিডেটিভ স্ট্রেস বৃদ্ধি পেয়েছে বলে সমীক্ষায় উঠে আসে। তাদের শুক্রাণুর ঘনত্ব, গতিশীলতা এবং আকারও ভাইরাসের কারণে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত হয়। রোগের তীব্রতার সঙ্গে পার্থক্যগুলোও সুস্পষ্ট হয়ে উঠছিল।